কিন্তু, ছাত্র-ছাত্রীদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি তথা তাদের ‘ন্যায্য’ দাবিতে কান দিতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। তারা এ ব্যাপারে অফলাইন পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি প্রকাশ করে দিয়েছে। সেইমতো আর কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ২০২১ বর্ষের মাস্টার্স ফাইনাল ও ২০২১-২২ বর্ষের মাস্টার ডিগ্রির প্রথম বর্ষের পরীক্ষা।
পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকলে তাদের কর্মসূচিও চলবে। তাদের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের আলোচনা যদি ফলপ্রসু হয়, তাহলে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেবেন। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ইউজিসির সিদ্ধান্ত মতো, তারা অফলাইনেই পরীক্ষা নিতে বাধ্য। যেখানে, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা অফলাইনে হচ্ছে, সেখানে ওদের অসুবিধাটা কোথায়।
পড়ুয়াদের বক্তব্য, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বা পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তাদের ‘ইগো’ নিয়ে চুপ করে আছেন।
পড়ুয়ারা তাদের এই কর্মসূচিকে ‘আন্দোলন’ বা ‘বিক্ষোভ’ বলতে নারাজ।
তাদের বক্তব্য, গত বছরেই তাদের ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সেটা নেওয়া হয়নি। এমনকি কলকাতার বা ছোট শহরের পাঠকেন্দ্রগুলিতে কোন অফ-লাইন ক্লাসও হয়নি। অন-লাইন ক্লাসও ঠিকমতো হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা সঠিক সময়ে তাদের পাঠ্যবইও দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের কথা না ভেবে, নিজেদের মতো করেই চালিয়ে গেছে তাদের কাজকর্ম। সঠিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুদাএর কাছ থেকে পাঠক্রমের যাবতীয় ফিজ সংগ্রহ করলেও, তাদের শিক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ সঠিক সময়ে দিতে ও ক্লাস করাতে ব্যর্থ হয়েছে।“
পড়ুয়াদের বক্তব্য, ‘ইন্দিরাগান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি’ সহ আরো বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অন-লাইনে পরীক্ষা নিলেও, এই বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সিদ্ধান্তে অনড়।
তারা ভাবছে না, অফ-লাইনে যারা পরীক্ষা দেবেন, তারা কীভাবে সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাবেন। কারণ, যেভাবে পরীক্ষাকেন্দ্র বিতরণ করা হয়েছে, তা এক কথায় ভয়ঙ্কর। কারো সিট পড়েছে, তার কেন্দ্র থেকে ৮০ কিমি, কারো ৫০-৬০ কিমি দূরে। বর্ধমানে যেভাবে, রবিবার সহ অন্যান্যদিন ট্রেন বন্ধ থাকছে, বর্ধমানে যাদের সিট পড়েছে, তারা সেখানে ওইদিন কীভাবে পৌছাবেন, তা একটা বিরাট সমস্যা।“
জানা গেছে, একাধিক অভিযোগ রয়েছে, নেতাজী সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা ও ক্লাস করানো নিয়ে। সবচেয়ে বড় কথা, পরীক্ষার এডমিট কার্ডও দেওয়া হয়নি কোন সেন্টার থেকেই। পড়ুয়াদের সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, ডাউনলোড করে নিতে। অথচ, তারা ভাবছে না, সকলের পক্ষে এই কাজটা সহজ নয়। বক্তাতব্ইয পড়ুয়াদের।
তাই, ছাত্র-ছাত্রীরা শুধু তাদের দাবীতেই অনড় নন, নেতাজী সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির ‘খামখেয়ালীপনার’ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের বক্তব্য, “ইউজিসির গাইডলাইন তাদের জন্য নয়, কেননা, তারা ২০২১-২২ এর পড়ুয়া। তাদের পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল ২০২২ এর ডিসেম্বরে। এক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়, নিজেই সেই পরীক্ষা সঠিক সময়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছে।“
সবমিলিয়ে, এখনো পর্যন্ত কোন সমাধানসূত্র বেড়িয়ে আসেনি। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইউজিসির গাইডলাইন দেখাচ্ছে, আর ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে অনড়।