নৌকা ডুবিঃ নির্জন দ্বীপে খাদ্য-পানীয়হীন নাবিকের দল, অবশেষে আজ উদ্ধার ১১জন, ৯ জন নিখোঁজ

ভয়েস ৯, ইন্টারন্যাশানাল ডেস্কঃ মাথার উপর রুক্ষ আকাশ। সামনে ধূ ধূ সমুদ্র। এক ফোটা জল নেই পান করার, অথচ সামনে অগাধ জলের রাশি। পায়ের নীচে কঠিন-কোমল বালিয়াড়ি। জনমানবহীন দ্বীপ। আর এই দ্বীপেই এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে কাটলো নৌকাডুবিতে বেঁচে যাওয়া ১১ জন নাবিকের ৬ টা দিন-রাত। 
আর অবশেষে উদ্ধার। আবার ফিরে আসা জীবনের আঙ্গিনায়। অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম সেফটি অথরিটি (এএমএসএ) জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ঈসার সময় আটকা পড়া দুটি নৌকার ১১ জন জেলেকে শেষপর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় পর্যটন শহর ব্রুম থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (২০০ মাইল) পশ্চিমে বেডওয়েল দ্বীপ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এখন তারা সুস্থ হয়ে উঠছে।
জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল ‘এক্সপ্রেস-১’ নামের একটি নৌকা ১০ জন আরোহী নিয়ে ডুবে যায়। অপর একটি নৌকা ‘পুত্রি জয়া’ গত ১১ বা ১২ এপ্রিল 'চরম আবহাওয়ায়' ডুবে যায় এবং নয়জন ক্রু ডুবে মারা যায় বলে মনে করা হচ্ছে। এই ‘পুত্রি জয়ার’ একমাত্র জীবিত নাবিক বেডওয়েলে পৌঁছানোর আগে জলে ৩০ ঘন্টা কাটিয়েছিলেন। 
এরপর তিনি আশ্রয় নেন এক নির্জন দ্বীপে। আরো কয়েকজনের সঙ্গে। সাদা বালির একটি প্রত্যন্ত, উন্মুক্ত এবং দুর্গম অংশ যেখানে কোনও আশ্রয় বা মিঠা জলের উত্স ছিল না। নৌকার ধ্বংসাবশেষ নিয়ে তারা একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে। সেখানেই তারা থাকছিলেন। খাদ্য নেই, জল নেই, বাঁচার আশা যখন একেবারেই ক্ষীণ হয়ে আসছিল, তখন অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স আচমকাই তাদের দেখতে পায়। 


এরপর একটি ব্রুম-ভিত্তিক উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয় উদ্ধারের কাজে। দিনের আলো কমতে শুরু করার আগেই এই ১১ জন আরোহীকে উদ্ধার করা হয়েছিল। হেলিকপ্টার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পিএইচআই এভিয়েশনের ব্যবস্থাপক গর্ডন ওয়াট বলেন, উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারের ক্রুরা বালিতে অবতরণ করতে পারেনি। জানা গেছে, জীবিতদের ব্রুম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আধিকারিকরা জানান, তারা সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের ইন্দোনেশিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad