Breaking News

6/trending/recent
সংবাদ ভয়েস ৯ বাংলাদেশ, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ ও অনাবাসী বাঙ্গালীদের প্রিয় নিউজ পোর্টাল হোয়াটসঅ্যাপ +৯১-৮৯২৭০৪২৫৯৪ সম্পাদক : তারক ঘোষ

Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

দুঃখ থেকে মুক্তি লাভের উপায় কী? দুঃখ থেকে মুক্তি লাভের উপায় হলো দুঃখের কারণে ভগবানকে দোষ না দিয়ে, দুঃখটাকেই ত্যাগ করা



 

দুঃখ হলো সেই তীর, যা বাইরে থেকে এলেও, ভিতরে থাকে দুঃখের অনুভূতি। যদি, সেই অনুভূতিটা ত্যাগ করা যায়, তাহলে দুঃখের কারণে ব্যাথা পেতে হবে না। আর ভালো-মন্দ, আনন্দ-বেদনা সব কিছুকেই যদি ঈশ্বরের দান বলে মেনে নেওয়া যায়, তবেই এটা সম্ভব।

 

তারক ঘোষ

 

শ্রীরামকৃষ্ণদেব বলছেন – “যারা শুধু পণ্ডিত, কিন্তু ভগবানে বিশ্বাস নেই, তাদের কথা গোলমেলে। সামাধ্যয়ী নামে এক সাধু বলেছিলেন ঈশ্বর নীরস, তোমরা নিজের প্রেমভক্তি দিয়ে সরস করো।‘’ 




বাবাজী মহারাজ রবীন্দ্রনাথের মতোই ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে ভীষণভাবে অন্তরে স্থান দিয়েছিলেন। তার প্রবচনে বারবার উঠে আসতো ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের কথা। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত গ্রন্থে ঠাকুর বলছেন – ‘সাধুরা ঈশ্বরের উপর ষোল আনা নির্ভর করবেই। তাদের সঞ্চয় করতে নেই। সংসারীর পক্ষে সংসার প্রতিপালন করতে হয়। তাই সঞ্চয়ের দরকার। পনছি অউর দরবেশ সঞ্চয় করে না।‘ 

এই কথাগুলি বাবাজীও বহুবার বলেছেন। নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের অনেক গুরুদেবও এই কথা বলেছেন। 

 ‘গীতা, গীতা’, দশবার বলতে বলতে ত্যাগীহয়ে যায়। গীতায় এই শিক্ষা – ‘হে জীব, সব ত্যাগ করে ভগবানকে লাভ করার চেষ্টা করো। সাধুই হোক, সংসারীই হোক, সব আসক্তি ত্যাগ করতে হয়।‘ 

 



কামনা দুঃখের কারণ হয়।মায়া তাকে ঘিরে ধরে। কেউ কামনা আর লোভের বশে তাদের পিতা-মাতাকে দুঃখ দিতেও ছাড়ে না। তাদের প্রতি মুহুর্তে অন্যায়ভাবে আক্রমণ করে।  আর দুঃখ থেকে মুক্তি লাভের উপায় কী? দুঃখ থেকে মুক্তি লাভের উপায় হলো দুঃখটাকেই ত্যাগ করা। দুঃখের কারণে ভগবানকে দোষ না দিয়ে, ভগবানকে ত্যাগ না করে দুঃখটাকেই ত্যাগ করা। মনে রাখবেন, যারা অন্যায়ভাবে কারো দুঃখের কারণ হয়, তারা তাদের দেওয়া দুঃখটাই তারা এমনভাবে ফেরত পায়, সারাটা জীবন সেই দুঃখের বাইরে তারা আর বেরোতে পারে না। 

গীতায় বাবাজী মহারাজ বলছেন কারো মনে গাড়ি কেনবার কামনা জন্মালো। ঠাকুর দেবতার কাছেও সেই কামনা পূরণের ইচ্ছাও জানালো। একসময়, সে ফল লাভ করলো। পরে, সেই গাড়ির ধাক্কা খেয়ে কারো মৃত্যু হলো, আর মালিকের জেল হলো।




পাঠকদের প্রতি একটি নিবেদন

আপনারা যদি বিজ্ঞাপনগুলি ক্লিক করে অন্ততঃ ২০ সেকেন্ড করে দেখেন, তাহলে এই সংবাদপত্র, বিজ্ঞাপনবাবদ অর্থ পেতে পারে। আপনারা জানেন,  নিউজপেপার চালানোর জন্য এটাই আয়ের একমাত্র উৎস।


 বাবাজী বলছেন – ‘ভগবানের কাছে যে যা চায়, সে তাইই পায়। তাই ভগবানের কাছ থেকে কোন কিছু চাইতে হয় সাবধানে। ভক্তকে যে জিনিস বেধে রাখে, তা হলো ক্ষুদ্র ফল-কামনা। ফল-কামনা ত্যাগ করে ভগবানের আরাধনা করটাই শ্রেয়।গীতার ব্যাখ্যায় বাবাজী মহারাজ লিখছেন – ‘দেবদেবীর ক্ষমতা সীমিত। তারা মোক্ষ দান করতে পারেন না। 

শ্রীজানকীদাসজী, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, বাবাজী মহারাজ বলেছেন বিপদ ভিতর থেকেই আসে। কাজেই দুঃখ বাইরে থেকে আসে না। দুঃখের অনুভূতি ভিতর থেকেই আসে। আর এই আসারকারণ হলো, দুঃখ আমরা পেতে চাই। কিন্তু, দুঃখকে যদি পেতে না চাই, তাহলে দুঃখ এলেও কষ্ট না দিয়েই ফিরে যাবে। 

 



দুঃখ হলো সেই তীর, যা বাইরে থেকে এলেও, ভিতরে থাকে দুঃখের অনুভূতি। যদি, সেই অনুভূতিটা ত্যাগ করা যায়, তাহলে দুঃখের কারণে ব্যাথা পেতে হবে না। আর ভালো-মন্দ, আনন্দ-বেদনা সব কিছুকেই যদি ঈশ্বরের দান বলে মেনে নেওয়া যায়, তবেই এটা সম্ভব। আর এর জন্য নিজেকে নির্লিপ্ত করতে হবে। 

মনে রাখবেন, এই সংসারে সবাই দস্যূ রত্নাকর। পাপ আপনি যে কারণেই করুন না কেন, সেই পাপের ভাগ কিন্তু আপনার পরিবারের অন্য সদস্যও নেবে না। পাপের আয় সবাই নেবে, কিন্তু পাপের ফল আপনাকেই ভোগ করতে হবে। আসক্তি আমাদের পাপের পথে নিয়ে যায়। নিজের যেটুকু আছে, তা নিয়ে সুখী থাকতে খুব কম মানুষই পারে। অন্যের দেখে, অনেক সময় আসক্তি আসে। নিজের সাধ্যে তা আয়ত্ব করা কঠিন হলে, মানুষ বাঁকা পথের আশ্রয় নেয়। আর সেই পথেই আসে লোভ। 

বাবাজী বলতেন, পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। আর পাপ এর বাপ কে? পাপের বাপ হলো লোভ। চোখের সামনে এখন আপনারা লোভের পরিণতি দেখতে পাচ্ছেন। 

কিন্তু, বহু মানুষ তাদের অজান্তে এমন কিছু পাপ করে ফেলেন, তারা নিজেরাও সেটা জানতে পারেন না। কিন্তু, ভগবানের হিসাব-নিকাশের খাতায় সব লেখা থাকে।

বাবাজী মহারাজ গীতার একটি শ্লোকের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন গৃহের মালিক যদি ভাল হন, শক্ত হন, তবে গৃহবাসীরা আনন্দে থাকেন। এই জগতের যিনি মালিক, সেই ভগবান প্রেমিকও, আবার কঠোরও। তাই আমাদের কোন ভয় নাই। গীতা চিরন্তনেতিনি বলছেন অনেক সময় ধর্মে বিকার আসে, আর সেই বিকৃত ধর্মকেই মানুষ আসল ধর্ম বলে মনে করেন।

 আশ্রমে যদি তপস্যার বদলে ইন্দ্রিয়ভোগ চলে, ত্যাগী সন্ন্যাসীর বেশ ধরে, কেউ যদি অধর্ম করে, ধর্মের স্থানে যদি অধর্ম হয়, তবে একসময় ভগবানকে নেমে আসতেই হয়। ধর্ম স্থাপনার জন্য তাকে আসতেই হয়, আসতেই হবে। 




 আমি এরকম অনেক ঘটনার সাক্ষী। যেখানে এই ধরণের পাপের পরিণতি দেখেছি কতটা নির্মম হয়। মনে রাখতে হয়, ভক্তরাই সব। আজ তারা একজনকে মাথায় নিয়ে নাচতে যেমন পারেন, অন্যায় দেখলে, তাকে মাথা থেকে মাটিতে নামাতে তাদের বেশি বেগ পেতে হয়না। পাপ ক্রমশঃ জড়িয়ে ধরছে, সমগ্র সমাজটাকে। বাবাজী এই ভয়টাই পেতেন। তাই সাবধান করতেন। 

আর একটি শ্লোকের ব্যাখ্যায় বাবাজী মহারাজ বলছেন আমরা যদি সর্বপ্রকার আশা ত্যাগ করতে পারি, তাহলে আমরা শান্তিতে থাকতে পারি। নৈরাশ্যং হি পরমং সুখম’ – এখানে নৈরাশ্য বলতে হতাশাকে বলা হয়নি, কামনা ত্যাগকে বলা হয়েছে। 

কর্মের ফল কামনা ত্যাগ করতে পারলেই যথার্থ কর্মজীবনের শুরু হয়। তবে, সংকীর্ণ, স্বার্থমগ্ন, সুখী গৃহকোণ লোভী ব্যক্তিরা এটা করতে পারেন না। তাদের অনেক পিছুটান থাকে। 

আগেই বলেছি, বাবাজী মহারাজ সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন, তাই এই সমাজে কী কী ভয়ঙ্কর ব্যাধি আসতে পারে, তা তিনি আগাম বলে গিয়েছিলেন। মানুষ কীভাবে, নিজেরই পাতা ফাঁদে আটকে পড়বে, তাও তিনি বলে গেছেন।

 

 

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Below Post Ad