অসুস্থ মায়ের স্থান হয়েছিল গোয়ালঘরে, শেষে তাকে উদ্ধার করলেন ইউএনও

বিশ্বজিৎ মন্ডল, ঢাকাঃ ছোটবেলা থেকেই সবাই শুনে এসেছে সন্তানদের জীবনে সবথেকে মূল্যবান সম্পদ তার মা-বাবা। আর মা-বাবার শেষ জীবনের একমাত্র নির্ভরশীল ও ভরসার হাত হয় তার সন্তানের। কিন্তু বর্তমান সময়ে কতটা উপযুক্ত এই অমূল্য শব্দগুলির। গল্প নয়, জেনে নেয়া যাক একটি বাস্তবতার চিত্র.. সম্প্রতি বাংলাদেশের যশোরের চৌগাছায় এবার অসুস্থ অবস্থায় গোয়ালঘরে ফেলে রাখা মাকে উদ্ধার করে ছেলের ফ্ল্যাটবাড়িতে তুলে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা।

 সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের বুড়িন্দিয়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একটি সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলিশসহ উপস্থিত হন ওই বাড়িতে। দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বৃদ্ধ-অসুস্থ মা (৬৫) গোয়ালঘরের ময়লার মধ্যে মেঝেতে একটি কাঁথার ওপর প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। অথচ পাশেই সম্পূর্ণ পাকা একটি ছাদের রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক পাখার নিচে বসে বৃদ্ধার পুত্রবধূ এবং তার পুত্রবধূ (বৃদ্ধার ছেলের পুত্রবধূ) রান্না করছে। পাশেই চার রুমের আলীশান একটি ফ্ল্যাটবাড়ি। যার প্রতিটি রুমের মেঝে, এমনকি ছাদে ওঠার সিঁড়ি পর্যন্ত টাইলস করা। কক্ষগুলো টিভি, ফ্রিজসহ আসবাবপত্র দিয়ে পরিপাটি করে সাজানো। 

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই বৃদ্ধার পুত্রবধূর কাছে বৃদ্ধাকে কেন এই ময়লার মধ্যে গোয়ালঘরে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন, উনি কাপড়চোপড়ে মূত্রত্যাগ করে ফেলছেন বলে লোকজন বলেছে গোয়ালঘরে রাখতে। আবার বলেন, বৃদ্ধা নিজেই এখানে থাকতে চেয়েছে। একপর্যায়ে গ্রামের নারী-পুরুষরা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা বলেন, বৃদ্ধার ঝগড়াটে পুত্রবধূর ভয়ে তারা কোন প্রতিবাদ করতে পারেননি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। একমাত্র ছেলে। তিনিও নিজের মাকে গোয়ালঘরে গরুর মলমূত্রের মধ্যে ফেলে রেখেছেন। তিনি বলেন, ওই মাকে ছেলের ঘরে তুলে দেয়া হয়েছে এবং চিকিৎসক দেখানোর জন্য বলা হয়েছে। এর অন্যথা করার অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই ছেলে ও পূত্রবধূর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad