জানা গেছে, করাচির এসআইটিই এলাকার নাউরাস ক্রসরোডের কাছে একটি কারখানায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
ওই অঞ্চলের উদ্ধারকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই পদপিষ্টের ঘটনায় তিন শিশুও নিহত হয়েছে। উদ্ধারকারীরা জিও নিউজকে জানিয়েছেন, পদদলিত হওয়ার সময় ছয়জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রেশন নেওয়ার সময় ওই স্থানে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছিল।
কেয়ামারির সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) ফিদা হুসেন জানওয়ারি ডনকে বলেন, সিন্ধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ট্রেডিং এস্টেট (এসআইটিই) শিল্প এলাকার এফ কে ডায়িং কোম্পানির বাইরে খাবার সংগ্রহের জন্য শত শত মহিলা ও শিশু আতঙ্কিত হয়ে একে অপরকে চাপ দিতে শুরু করলে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকারী দল মৃত ও আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কেয়ামারির ডেপুটি কমিশনার মুখতিয়ার আবরো পাকিস্তানের 'ডন'পত্রিকাকে বলেন, কারখানার মালিকের কাছে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে 'নো অবজেকশন' ছিল না এবং কারখানার মালিক নিরাপত্তাও চাননি। এখন পর্যন্ত সাত জন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। জুলফিকার নামে ওই কারখানার মালিককে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান তিনি।
নিহতদের মধ্যে দুই ছেলে, এক মেয়ে ও নয়জন মহিলার দেহ সোহরাব গোথের ইধি মর্গে পাঠানো হয়েছে। এসএসপি জানওয়ারি বলেন, ডাইং কোম্পানি তাদের কর্মীদের পরিবারকে তাদের মধ্যে যাকাত বিতরণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তিনি বলেন যে প্রায় ৪০০ মহিলা এসেছিলেন এবং বিশাল ভিড়ের ভয়ে সংস্থার কর্মীরা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, প্রাঙ্গণের ভিতরে লাইন দেওয়ার জন্য কোনও ব্যবস্থা ছিল না, স্থানীয় পুলিশকেও এই ব্যাপারে জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, গরমে এবং পদদলিত হওয়ার সময় বেশ কয়েকজন মহিলা অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। এরপর পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবহেলার অভিযোগে কয়েকজন কর্মচারীকে আটক করেছিল এবং মহিলাদের বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেছিল।
তিনি বলেন, "জানা গেছে, কোম্পানির মালিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।"
সাউথ ডিআইজি বালুচ বলেন, রমজানে দরিদ্রদের মধ্যে যাকাত ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করত প্রতিষ্ঠানটি। তিনি বলেন, শুক্রবার ছিল তৃতীয় দিন। সংস্থাটি যখন রেশন বিতরণ করছিল তখন প্রায়৪০০ থেকে ৫০০ জনের মতো লোক উপস্থিত হয়েছিল।
পদদলিত হওয়ার কারণ কী হতে পারে জানতে চাইলে আবরো বলেন, উন্মুক্ত জল সরবরাহের পাইপের কারণে এত বেশি সংখ্যক মানুষের লাইনে দাঁড়ানোর জায়গা সংকুচিত হয়েছিল।
পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শুক্রবার নিহতদের মধ্যে ওয়াসিম আসিফ (১০), সাদ উমর (৭), উম্মে-ই-হানি ইরশাদ (৭), মিসেস খুরশিদা জাফর, আবিদা রশিদ, সোনিয়া সাঈদ, সাঈদা উমর, নাসিমা শাহিদ ও ওয়াহিদা ফজল।