এমন বহু ছাত্র-ছাত্রী আছেন, যারা পড়াশোনায় যথেষ্ট ভালো, উচ্চমাধ্যমিকে ফলও ভালো করেছেন, কিন্তু আর্থিক কারণে উচ্চশিক্ষা নিতে পারছেন না, তাদের সাহায্য করার জন্য সরকারি বা বেসরকারিভাবে বিভিন্ন স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলোর মাধ্যমে তারা কিছুটা হলেও পড়াশোনার দিকে সাহায্য পায়। কিন্তু অনেকেই জানেন না কী কী স্কলারশিপ পাওয়া যেতে পারে, যোগ্যতা কী বা কখন কোথায় আবেদন করতে হবে। এখানে সেই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দেওয়া হলো সমস্ত তথ্য।
স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে এই রাজ্যে বসবাসকারী পিছিয়ে পড়া অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যাতে এই রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে পারে তাই এই স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাধ্যমিক পাশের পর ছাত্রছাত্রীরা এতে আবেদন করা শুরু করতে পারবেন। তবে থাকতে হবে ৬০ শতাংশ নম্বর। এরপর ডিপ্লোমা, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর (দুটি ক্ষেত্রেই ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেলে), এমফিল, পিএইচডি কোর্সে আবেদন করা যাবে। এছাড়া প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রাপ্ত নম্বর থাকলে করা যাবে রিনিউয়াল আবেদনও। যোগ্য প্রার্থীরা প্রতিমাসে নূন্যতম ১০০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।
আবেদন পদ্ধতি
ইচ্ছুক আবেদনকারীরা শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমেই এই স্কলারশিপটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://svmcm.wbhed.gov.in/page/about.php
২) জিপি বিরলা স্কলারশিপ
এটি একটি বেসরকারি স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় 80% অথবা তার বেশি নম্বর পেতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। এই স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন করতে হলে ছাত্র ছাত্রীর পারিবারিক আয় ৩,০০,০০০ টাকার কম হতে হবে। এটি অবশ্যই অফলাইন আবেদন করতে হবে। এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য এদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম ডাউনলোড করে ফিলাপ করে প্রদত্ত ঠিকানায় পাঠাতে হবে। সাধারণত জুলাই এবং সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয়। এই স্কলারশিপ অনুযায়ী বার্ষিক ভাবে এককালীন ৫০,০০০ টাকা পাওয়া যায়।
৩) এলআইসি ইন্ডিয়া স্কলারশিপ
এটিও একটি বেসরকারি স্কলারশিপ। তবে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয় অনলাইনে। এই স্কলারশিপের স্কলারশিপের আবেদনের জন্য পরীক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০% বা তার বেশি নম্বর পেতে হবে এবং আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ১,০০,০০০ টাকার কম হতে হবে। এই স্কলারশিপ অনুযায়ী আবেদনকারী বার্ষিক ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন।
৪) সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ
এই স্কলারশিপটি জিন্দাল কোম্পানি থেকে দেওয়া হয়। এর জন্য আবেদন করতে হয় অফলাইনে। সাধারণত সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসের মধ্যে এদের ওয়েবসাইট থেকে ফরম ডাউনলোড করে আবেদন করা যেতে পারে। এই স্কলারশিপের আবেদনের জন্য ছাত্রীদেরকে উচ্চমাধ্যমিকে ৬৫% এবং ছাত্রদেরকে উচ্চমাধ্যমিকে ৭০% নম্বর পেতে হবে। এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর পারিবারিক বাৎসরিক আয় যদি চাকুরীজীবি হয় তাহলে ৪,০০,০০০ টাকার কম এবং অন্যান্যদের ক্ষেত্রে ২,৫০,০০০ টাকার কম হতে হবে। স্কলারশিপ আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীরা প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে পেয়ে থাকে।
৫) প্রিয়ংবদা বিরলা স্কলারশিপ
এটি একটি অফলাইন বেসরকারি স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপের আবেদন উচ্চমাধ্যমিক ফল প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে করতে হয়। এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে উচ্চ মাধ্যমিকে 60% নম্বর পেতে হবে এবং তার পারিবারিক বাৎসরিক আয় ৭৫ হাজার টাকার কম হতে হবে। অনলাইনে আবেদন করে এর ফর্ম ফিলাপ করা হয়। আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীরা এককালীন ২৪ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
৬) নিকন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম
এটি অনলাইন স্কলারশিপ আবেদন করা হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শুধুমাত্র পাশ করলেই হবে তবে তাকে ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত কোন কোর্স বা ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং সেই কোর্স এর মেয়াদ কমপক্ষে তিন মাস হতে হবে। এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম হতে হবে। নিকন এবং বারিস্টারি এর সঙ্গে যুক্ত লোকেরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে না। এই স্কলারশিপের আওতাধীন ছাত্রছাত্রীরা সর্বাধিক ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন।