ভয়েস ৯, নিউইয়র্কঃ আগামি ১৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার নিউইয়র্কের বাংলাদেশ হিন্দু মন্দিরে শিবরাত্রী ব্রত ও বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে। জানা গেছে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টায় শ্রীশ্রী বিগ্রহের অঙ্গরাগ ও শৃঙ্গার দিয়ে শুরু হবে অন্যান্য পুজো ও আচার পালন। জানা গেছে, এই সংস্থার লক্ষ্য হল- হিন্দু ধর্মের শিক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে ভবিষ্যত প্রজন্মকে পরিচিত করানো।
উল্লেখ্য, নিউয়র্কের ‘বাংলাদেশ হিন্দু মন্দির’ একটি অলাভজনক হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন। প্রবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক উন্নতির জন্য এই সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। প্রতি বছর এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং কানেকটিকাটের হিন্দু সম্প্রদায়ের নানা পুজো অনুষ্ঠান ও হিন্দু উত্সব পরিচালনা ও আয়োজন করে।
এই সমস্ত পুজোর মধ্যে রয়েছে দুর্গা পূজা, কালী পূজা, সরস্বতী পূজা, কার্তিক পূজা, গণেশ পূজা এবং জন্মাষ্টমী। পুজোর অনুষ্ঠান ছাড়াও ওইসমস্ত দিনগুলিতে অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঙ্গুলিতে বিশেষ সহ প্রধান হিন্দু উত্সব উদযাপন করে পূরণ করে।
এছাড়া, প্রতি সপ্তাহের শনি ও রবিবার একটি নিয়মিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
হিন্দু মহাপুরাণ তথা শিবমহাপুরাণ অনুসারে শিবরাত্রির সময় শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তান্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল । এর নিগুঢ় অর্থ হল শিব ও শক্তি তথা পুরুষ ও আদিশক্তি বা পরাপ্রকৃতির মিলন।
এই মহাশিবরাত্রিতে শিব তার প্রতীক লিঙ্গ তথা শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন।
শিবমহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত। সে প্রচুর জীবহত্যা করত একদিন শিকারে বেরিয়ে তার খুব দেরি হওয়ার ফলে সে জঙ্গলে পথ হারিয়ে রাতে হিংস্র জন্তুর ভয়ে এক গাছের উপর আশ্রয় নেয়। কোনো শিকার না পেয়ে সে হতাশ হয়ে গাছ থেকে একটা করে পাতা ছিঁড়ে নিচে ফেলতে থাকে। সেই গাছটি ছিল বেলগাছ । আর সেই বেলগাছের নিচে একটি শিবলিঙ্গ ছিল। সেদিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় পড়ে এর ফলে তার শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয় তার অজান্তেই। পরদিন ব্যাধ বাড়ী ফিরে এলে তার খাবার সে এক অতিথিকে দিয়ে দেয়। এতে তার ব্রতের পারণ ফল লাভ হয়।
এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে যমদূতরা তাকে নিতে আসে। কিন্তু শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হেতু শিবদূতরা এসে যুদ্ধ করে যমদূতদের হারিয়ে ব্যাধকে নিয়ে যায়। যমরাজ তখন শিকার করেন যে শিবচতুর্দশী ব্রত পালন করে এবং শিব ভক্ত যেই জন, তার উপর যমের কোনো অধিকার থাকেনা। সে মুক্তিলাভ করে। এইভাবে মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।
পশ্চিমবঙ্গের তারকেশ্বরের শিবমন্দির