Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Advt 720

বাবাজী মহারাজ বলতেন, শ্রীগুরু আমাদের ভান্ডারায় যেতে নিষেধ করতেন, কারণ সাদা কাপড়ে দাগ তাড়াতাড়ি লাগে



তারক ঘোষ



একশ্রেণির (সবাই নন) ‘সর্বত্যাগী’ সাধুরাই বেশিরভাগ সময় মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েন। আর এর পিছনে আছে সেই লক্ষ-লক্ষ-কোটি টাকার সম্পত্তির অধিকার। সোজা ভাষায়, নিরামিষ আহারও এই শ্রেণির মানুষের মন থেকে লোভকে দূর করতে পারেনি।

 

সাধারণ গৃহী মানুষের যা শোভা পায়, তা একজন সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর শোভা পায় না। একজন প্রকৃত সাধু যেভাবে সবকিছু বিচার করতে পারেন, সাধারণ সাধু বা গৃহীরা তা পারেন না। শ্রীশ্রী জানকীদাসজী ছিলেন যোগীরাজ। তাই তার জীবন দর্শন ও শিক্ষা ছিল উচ্চস্তরের। তিনি এই ধরাধামে এসেছিলেন লোকশিক্ষার জন্য, যেমন এসেছিলেন আমাদের বাবাজী মহারাজ। তাই শ্রীশ্রী জানকীদাসজী একবার বলেছিলেন – একজন এমএ পাশ ব্যক্তিই, আর একজন এমএ পাশ ব্যক্তিকে বুঝতে পারবে। এটা অহঙ্কার বা উচ্চশিক্ষার তুলনা নয়। এটা হল, একজন যোগ্য ব্যক্তিই, অন্য যোগ্য ব্যক্তির কাজকর্ম বুঝতে পারবে বা তার যোগ্যতার বিচার করয়ে পারবে।

বাবাজী মহারাজ বলছেন,একজন সৎ মানুষ হতে হলে তার চিত্তশুদ্ধির প্রয়োজন আছে। মন যদি কূ-চিন্তা, অন্যের অমঙ্গল কামনায় সচেষ্ট থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি আধ্যাত্মিক পথের যোগ্য নয়। আর এই চিত্তশুদ্ধির জন্য আহারশুদ্ধির প্রয়োজন। আহারশুদ্ধি বলতে শুদ্ধ আহার্য্য দ্রব্যের কথা বলা হয়েছে। শুদ্ধ আহার বলতে নিরামিষ আহারকে বলা হচ্ছে না। বাবা লিখেছেন –বৃন্দাবনসহ নানা তীর্থস্থানে মানুষ নিরামিষ আহার গ্রহন করেন, কিন্তু, সেখানে যত মামলা-মোকদ্দমা হয়, তা সেখানকার নিরামিষ আহারকারীদের নামেই। বুঝতে পারলেন কিছু?

একশ্রেণির সর্বত্যাগী সাধুরাই (সবাই নন) বেশিরভাগ সময় মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েন। আর এর পিছনে আছে সেই লক্ষ-লক্ষ-কোটি টাকার সম্পত্তির অধিকার। সোজা ভাষায়, নিরামিষ আহারও এই শ্রেণির মানুষের মন থেকে লোভকে দূর করতে পারেনি।



শ্রীশ্রী জানকীদাসজী তাই বারে বারে আহারশুদ্ধির কথা বলেছেন। কেমন সেই আহারশুদ্ধি? বাবাজী মহারাজ লিখছেন, অন্ন সাধারণতঃ তিনভাবে দূষিত হয়। এগুলি হল – নিমিত্ত দোষ, স্পর্শ দোষ ও দৃষ্টি দোষ। আপনারা জানেন, কিছু মানুষ খুব সুন্দর বাড়ি তৈরি করান, সেটা শুধু নিজের সৌন্দর্য বোধের জন্যই নয়, অন্যকে টেক্কা দেওয়ার জন্যও। কারণ, সেই বাড়ি অন্যেরা দেখে হিংসায় জ্বলবে।

যাইহোক, নিমিত্ত দোষ হল – কেউ কেউ আছেন, যারা অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থের একটা অংশ সাধুদের দান করেন। ভক্তি থেকে কতটা, বলা যায় না, ইনকাম ট্যাক্স ফাকি দেওয়ার জন্য, কিংবা পাপস্খলনের জন্যই অনেকে এটা করেন। কিন্তু, সেই অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে কেনা অন্ন যদি সাধুরা গ্রহণ করেন, তবে, সাধুরাও তার পাপের ভাগী হন। এটাই নিমিত্ত দোষ।

অনেক সময়, অনেকে ভান্ডারা দেন। মাঝে মাঝে সেখানেও কালো টাকা ঢুকে পড়ে। আর সেই ভান্ডারায় অংশ নিয়ে সাধুরাও নিমিত্ত দোষের শিকার হন। কিন্তু, এখন এসব কেউ আর ভাবে বলে মনে হয় না। সাদা কাপড়ে দাগ তাড়াতাড়ি লাগে, কিন্তু টাকার গায়ে দাগ লাগে – একথা খুব কম মানুষই ভাবেন। একশ্রেণির (সবাই নন) সাধু আছেন, যারা এই টাকার পিছনেই দৌড়ে যান। ধর্মের পিছনে খুব কম।


এই বই দুটি যারা কিনতে ইচ্ছুক এই 8927042594 নম্বরে যোগাযোগ করবেন।

শ্রীশ্রী জানকীদাসজী মহারাজ নানা সত্য ঘটনার মধ্য দিয়ে বাবাজী মহারাজের কাছে, এই নিমিত্ত দোষের কথা বলেছেন। আশ্রমে দানের অর্থ সৎ পথের, না, অসৎ পথের, ভান্ডারার অর্থ কোন পথের, সেটা চিন্তা করে, জেনে তবেই তা গ্রহণ করতেন।  বাবাজী মহারাজ বলেছেন, ‘বাবাজী মহারাজ আমাদের তাই ভান্ডারায় যোগ দিতে নিষেধ করতেন।‘ (স্বামী শ্রীশ্রী প্রজ্ঞাদাস কাঠিয়া রচিত ‘জীবন পথের পাথেয়’ থেকে)

শ্রীশ্রী জানকীদাসজী স্পর্শ দোষের কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, অনেকে শুদ্ধ মন নিয়ে রসুই করে না। আর শুদ্ধাচারে, শুদ্ধ মনে রসুই না করলে, তার প্রভাব, প্রকৃত সন্ন্যাসীর উপর পড়বেই। তিনি বলছেন, রসুই করার সময়সুচিন্তা ও জপ করতে হয়। এই আহার সাধকদের চিত্তশুদ্ধির সহায়ক হয়। তিনি বলেছেন, মায়ের রান্না, স্ত্রীর রান্না, কন্যার রান্না শ্রেয়। আর সাধকদের ক্ষেত্রে স্বপাকই বিধেয়।

আহার গ্রহণ করার আগে,  তা ঠাকুরজীকে মনে মনে নিবেদন করতে হয়। তারপর সেই নিবেদিত অন্ন গ্রহণ করতে হয়। আর দৃষ্টির দ্বারাও অন্ন দূষিত হয়। ঠাকুরজীর ভোগ সাদা কাপড়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়ার বিধান আছে, যাতে তার উপর কোন দৃষ্টি না পড়ে। কারণ, কারো কারো দৃষ্টিতে থাকে লোভের ছোঁয়া।। এটা আপনারাও জানেন। কারো দিকে লোভের দৃষ্টিতে তাকানোটা পাপ। আর সাদা কাপড়ে দাগ লাগলে তা পরিষ্কার বোঝা যায়।

কিন্তু, যে সাধক চিত্তভূমির স্তর অতিক্রম করে গেছেন, তার কাছে আর আহারশুদ্ধির প্রয়োজন নেই।


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies