জানা গেছে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টায় শ্রীশ্রী বিগ্রহের অঙ্গরাগ ও শৃঙ্গার দিয়ে শুরু হবে অন্যান্য পুজো ও আচার পালন।
জানা গেছে, শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় ওড়িশার রাজধানীতে একাদশ শতাব্দীর মন্দিরের দধিনাউটির (মুকুট) উপরে ভগবান লিঙ্গরাজের 'মহাদীপ' উত্তোলন করা হবে। গত মঙ্গলবার এক প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। ভগবান লিঙ্গরাজের আচার-অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পাশাপাশি ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং ভক্তদের জন্য জলের ব্যবস্থা, পার্কিং এবং টয়লেটের ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাজারে সাতজন ডিএসপি ও একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ১৫ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
জানা গেছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি মহা শিবরাত্রিতে ভোর ৩টায় ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরটি। অন্যদিকে, আঠাগড়ের ধবলেশ্বর মন্দিরে মহা শিবরাত্রির দিন রাত দেড়টা থেকে রাত ২টার মধ্যে মহাদীপকে মন্দিরের উপরে তোলা হবে।
এদিকে, শৈবতীর্থ তারকেশ্বরও সেজে উঠেছে মহা-শিবরাত্রির জন্য। এই শিবরাত্রি উপলক্ষে শুধু আশপাশের শহর থেকে নয়, ভারতের নানাপ্রান্ত থেকে সমবেত হন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। এবারে যেহেতু, হুগলি ত্রিবেণীতে ও গঙ্গার অপর পাড়ে কল্যাণীতে বিশেষ কুম্ভ মেলা হচ্ছে, তাই কুম্ভ ফেরত বহু সাধু-সন্ত এবারের মেলায় আসতে পারেন।
এই বিরাট পূণ্যার্থী-ভক্তদের চাপ সামলাতে প্রশাসনিক নিরাপত্তা নেওয়া হচ্ছে। যেহেতু, মন্দিরে ওইদিন সন্ধ্যায় মহিলাদের ব্যপক ভিড় হয়, তাই সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কারণ, ওইদিন মন্দির চত্বরে নানা ধরণের অসামাজিক কাজ ও মহিলাদের প্রতি অশালীন আচরণের ঘটনা ঘটে বলে অনেকবার অভিযোগ উঠেছে, তাই এবার আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থায়।
এছাড়া, স্থানীয় পুরসভার পক্ষ থেকে পূণ্যার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পূর্ব রেল ওইদিন বেশ কিছু স্পেশাল ট্রেন চালাবে বলে আপাততঃ জানা গেছে।
হিন্দু মহাপুরাণ তথা শিবমহাপুরাণ অনুসারে শিবরাত্রির সময় শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তান্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল । এর নিগুঢ় অর্থ হল শিব ও শক্তি তথা পুরুষ ও আদিশক্তি বা পরাপ্রকৃতির মিলন।
এই মহাশিবরাত্রিতে শিব তার প্রতীক লিঙ্গ তথা শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন।
শিবমহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত। সে প্রচুর জীবহত্যা করত একদিন শিকারে বেরিয়ে তার খুব দেরি হওয়ার ফলে সে জঙ্গলে পথ হারিয়ে রাতে হিংস্র জন্তুর ভয়ে এক গাছের উপর আশ্রয় নেয়। কোনো শিকার না পেয়ে সে হতাশ হয়ে গাছ থেকে একটা করে পাতা ছিঁড়ে নিচে ফেলতে থাকে। সেই গাছটি ছিল বেলগাছ । আর সেই বেলগাছের নিচে একটি শিবলিঙ্গ ছিল।