উত্তরপ্রদেশঃ বৃন্দাবনের গোপীনাথ মন্দিরে প্রথমবারের মতো হোলি উদযাপন করলেন বিধবারা

প্রাচীন সব প্রথা উপেক্ষা করে বিভিন্ন আশ্রম ও আশ্রয়কেন্দ্রের বিধবারা বৃন্দাবনের ঐতিহাসিক গোপীনাথ মন্দিরে হোলি উদযাপন করেছেন। প্রয়াগরাজে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে বিজয়ের প্রতীক হিসেবে হোলি উৎসবের আয়োজন
অলোকেশ শ্রীবাস্তব, নতুন দিল্লি, ভয়েস ৯ঃ ‘ব্রজ গোপী খেলে হোলি… শুরু হয়েছে রঙ এর উতসব হোলি। প্রাচীন প্রথা উপেক্ষা করে বিভিন্ন আশ্রম ও আশ্রয়কেন্দ্রের বিধবারা বৃন্দাবনের ঐতিহাসিক গোপীনাথ মন্দিরে হোলি উদযাপন করেছেন। 
উত্তর প্রদেশের বৃন্দাবনের বিখ্যাত প্রিয়কান্ত জু মন্দিরে ভক্তরা আজ উৎসাহের সঙ্গে হোলি উদযাপন করেছেন। মহারাষ্ট্রে রঙের উৎসব উদযাপিত হচ্ছে এবং সারা দেশে আগামীকাল ৮ মার্চ হোলি উদযাপিত হবে। বৃন্দাবনে হোলির উৎসব শুরু হয় রংভারানী একাদশীর দিন বিকেলে। তবে, বসন্ত পঞ্চমী থেকেই মোটামুটি শুরু হয়ে যায় হোলি। 
দেশ-বিদেশের নানা-প্রান্ত থেকে এই হোলি উপলক্ষে উপস্থিত হয়েছেন অসংখ্য ট্যুরিস্ট। এদিন,আবির-গুলালে ঢেকে যায় বৃন্দাবনের অলি-গলি। গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে এই হোলির উৎসব। ওইদিন শ্যামাশ্যাম ব্রজবাসীদের সঙ্গে হোলি খেলেন। 
 হোলির উত্সব মনের চেতনা বিকশিত করে এবং শীতের পরে বসন্তের সূচনা ঘোষণা করে। এই উত্সবটিকে দেখা হয়, খারাপ এর পরাজয় ও বালোর জয় হিসাবে। তাই, হোলিকা দহন এবং হোলি মিলন দুটি দিনে উদযাপিত হয়।
বিধবারা রঙ এর উৎসবে অংশ নিতে পারবে না, এরকম গোঁড়া ঐতিহ্যকে উড়িয়ে দিয়ে বৃন্দাবনের বিধবারা গতকাল ঐতিহাসিক গোপীনাথ মন্দিরে হোলি উদযাপন করেছেন। 
সমাজ সংস্কারক ও সুলভ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা বিন্দেশ্বর পাঠক বলেন, "চৈতন্য বিহার আশ্রম, শারদা আশ্রম এবং বৃন্দাবনের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের বিধবারা ফুল ও গুলালের হোলিতে অংশ নিয়েছিলেন। 
বৃন্দাবনের এই বিরল কীর্তির তত্ত্বাবধানকারী বিন্দেশ্বর পাঠক বলেন, প্রচলিত একটি প্রাচীন প্রথা অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে বিধবাদের কেবল কার্যত অস্পৃশ্য বলে মনে করা হত না, তারা যে কোনও উত্সবে অংশ নেওয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। এই বিধবাদের সমাজের মূলস্রোতে নিয়ে আসার জন্য এই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয় এবং তাদের ভেষজ গুলাল, 'আগরবাতি' (ধূপকাঠি), মোমবাতি এবং ঠাকুরজির পোশাক প্রস্তুত করার প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রয়াগরাজের চন্দ্রশেখর আজাদ পার্কে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে বিজয়ের প্রতীক হিসেবে হোলি উৎসবের আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন অনুষ্ঠানের আয়োজক সুধীর গুপ্ত। সুধীর গুপ্ত বলেন, "প্রয়াগরাজ এমন একটি জায়গা যেখানে স্বাধীনতার আগে ভারতীয়দের দাঁড়ানোও কঠিন ছিল। ১৮৫৭ সালের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে রানী ভিক্টোরিয়ার হাতে ক্ষমতা চলে যায় এবং পার্কে রানী ভিক্টোরিয়ার একটি মূর্তি নির্মাণ করা হয়। ভারতীয়দের ছায়া থেকে অনেক দূরে, এই জায়গাটি দাসত্বের প্রতীক হয়ে ওঠে।"
 শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সংস্থার সচিব কপিল শর্মা বলেছেন, মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থানে হাজার হাজার হোলি প্রেমী ব্রজের হোলি উপভোগ করেছেন। চরকুলা নৃত্য থেকে ময়ূর নৃত্য - হাজার হাজার হোলি প্রেমী বিভিন্ন ধরনের হোলি নৃত্য উপভোগ করেছেন। অনুষ্ঠান শেষে মন্দিরের ছাদ থেকে রামধনু গুলালের বৃষ্টি হচ্ছিল।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad